‘মার্চ ফর গাজা’: ইসরাইল ও বিশ্ব গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত

‘মার্চ ফর গাজা’: ইসরাইল ও বিশ্ব গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত
‘মার্চ ফর গাজা’: ইসরাইল ও বিশ্ব গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত

গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় লাখো মানুষের বিক্ষোভ, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি আলোচিত

১২ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি। এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন, যারা ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে সোচ্চার হন। বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করে এবং ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ করার দাবি জানিয়ে নানা স্লোগান দেন। সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য ছিল গাজার জনগণের প্রতি আন্তর্জাতিক সহানুভূতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর।

এই সমাবেশটি শুধু দেশের মধ্যে নয়, আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যেমন আল-জাজিরা, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি), ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট, আরব নিউজ, এবং টাইমস অব ইসরাইল। এমনকি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভের খবর প্রকাশ করেছে টরেন্টো স্টারস্টার ট্রিবিউনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ
আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী অংশ নেন এবং গাজায় ইসরাইলের সামরিক কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানান। প্রতিবাদকারীরা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরাইলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবার আহ্বান জানান।

আরব নিউজ তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রায় ১০ লাখের বেশি মানুষ ঢাকায় জমায়েত হন। তারা গাজার জনগণের প্রতি বাংলাদেশের বৃহত্তম সংহতির নিদর্শন হিসেবে বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভকারীরা ইসরাইলি পণ্য বয়কটের শপথ নেন এবং ‘ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিনি’ স্লোগান দেন।

টাইমস অব ইসরাইল উল্লেখ করেছে যে, প্রায় এক লাখ মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। তারা ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়ে এবং ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানান। এ সময়, ইসরাইলি সরকারের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেকেই ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি পদদলিত করেন।

বিক্ষোভে প্রতীকী লাশ প্রদর্শন
সমাবেশে গাজার বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর প্রতীক হিসেবে কয়েকজন বিক্ষোভকারী প্রতীকী লাশ নিয়ে আসেন। এটি ছিল গাজার বেসামরিক লোকদের প্রতি সহানুভূতির একটি শক্তিশালী প্রকাশ।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও বাংলাদেশের জনগণের সংহতি
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, সমাবেশে প্রায় এক লাখ মানুষ অংশ নেন, এবং এ কর্মসূচি দেশীয় ইসলামী দলগুলোসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন লাভ করে। একদিকে যেমন সমাবেশটি একটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ছিল, তেমনি অন্যদিকে এটি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত মানুষের জোরালো সংহতি প্রকাশের এক অনন্য উদাহরণ ছিল।

এছাড়া এপি এবং ফাস্টপোস্ট রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই প্রতিবাদ কর্মসূচি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং এটি বিশ্বে ইসরাইলের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠিয়েছে।

বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ ও সংহতি
ঢাকায় আয়োজিত এই বিক্ষোভ কর্মসূচি একদিকে গাজার জনগণের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের গভীর সহানুভূতি ও সমর্থন প্রকাশ করেছে, অন্যদিকে ইসরাইলি আগ্রাসন এবং তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানা দেশে এমন বিক্ষোভ আরও বাড়তে পারে, যা মানবাধিকার রক্ষা ও শান্তির জন্য একটি বৃহত্তর আন্দোলনে পরিণত হতে পারে।