ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে: মির্জা ফখরুল

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ছবি: দিগন্ত বাংলা।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ছবি: দিগন্ত বাংলা।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাবে। এই পরিস্থিতি তখন নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে বলে তিনি সতর্ক করেন।


যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক

বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে বিএনপি প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নিতে যমুনা ভবনে প্রবেশ করে এবং প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে বিকেল ২টার দিকে তারা বের হন।


দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি

বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমরা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, বিশেষ করে নির্বাচন নিয়ে আমাদের উদ্বেগ ও সুপারিশ তুলে ধরেছি। আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, চলমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের ব্যবস্থা নিতে হবে। এটি না হলে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে অস্থিরতা তৈরি হবে, তা নিয়ন্ত্রণে রাখা সরকারের জন্যও কষ্টকর হয়ে উঠবে।”


চার্টার গঠনের প্রস্তাব

বিএনপি মহাসচিব জানান, সরকার গঠিত সংস্কার কমিশন নিয়ে বিএনপির মতামত তুলে ধরা হয়েছে এবং তারা এসব প্রক্রিয়ায় গঠনমূলক ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, “আমরা বলেছি যে, যেসব বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য হবে, সেগুলো নিয়ে একটি ‘চার্টার’ করতে আমরা রাজি আছি।”


ডিসেম্বরই কাট-অফ টাইম

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছেন। কিন্তু আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছি—আমাদের সময়সীমা ডিসেম্বর। এর পরের সময় আমরা মেনে নিতে রাজি নই।”

তিনি আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ দেননি। তবে বলেছেন যে তিনি ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে চান। কিন্তু আমাদের স্পষ্ট অবস্থান হলো—ডিসেম্বরই আমাদের কাট-অফ টাইম।”


দলের সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, “আমরা দলের অভ্যন্তরীণ আলোচনা ও মিত্রদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক করবো এবং আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।”


প্রতিনিধি দলের সদস্যরা

প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।


রাজনীতিতে আলোচনা জোরালো হচ্ছে

এ বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি আবারও নির্বাচন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবিকে সামনে রেখে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা আরও গতি পাবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।