চার বছর আগে অনুমোদিত হওয়া সত্ত্বেও এখনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে। জমি অধিগ্রহণে জটিলতা এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় ধীরগতির কারণে প্রতিদিনই দুর্ভোগে পড়ছেন এ মহাসড়কে চলাচলকারী হাজারো যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহনের চালকরা।
২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর একনেক সভায় ওয়েস্টার্ন ইকোনমিক করিডোর (উইকেয়ার) ফেজ-১ প্রকল্পের আওতায় এন-৭ জাতীয় মহাসড়ক অর্থাৎ ঝিনাইদহ-যশোর সড়ককে ছয় লেনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। প্রকল্পের নির্ধারিত মেয়াদ অনুযায়ী ২০২৬ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত ৯৪% কাজ বাকি রয়েছে।
সড়ক পরিদর্শনে দেখা যায়, ঝিনাইদহ বাইপাস, চুটলিয়া মোড় এবং ধোপাঘাটা সেতুর এলাকায় কিছু উন্নয়ন কাজ শেষ হলেও মহাসড়কের মূল অংশে উন্নয়ন কার্যক্রম শুরুই হয়নি। ধুলা, কাদা, খানাখন্দে ভরা সড়ক পথ দুর্ভোগের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, জমি অধিগ্রহণে দীর্ঘসূত্রতা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি প্রকল্পটিকে স্থবির করে তুলেছে। যানজট, ধুলাবালি ও দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।
স্থানীয় গাড়িচালক আব্দুর রাজ্জাক জানান,
প্রতিদিন হাজারো যানবাহন এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। রাস্তায় খানাখন্দে গাড়ি চলানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। অনেক সময় যানজটে আটকে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
আরেক যাত্রী শাহানাজ পারভীন বলেন,
আমি প্রতিদিন কালীগঞ্জ থেকে ঝিনাইদহ যাতায়াত করি। ধূলাবালিতে চোখ-মুখ জ্বালা করে, সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি না। স্কুল বা অফিসের সময় নষ্ট হয়।
একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. এনামুল হক জানান,
রাস্তায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় মালামাল পরিবহনে খরচ বেড়ে গেছে। ট্রাক ধীরগতিতে চলে, মাঝে মাঝে বিকলও হয়ে পড়ে। এতে ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে উইকেয়ার ফেজ ১-এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নিলন আলী বলেন,
জমি বুঝে পেলেই পূর্ণগতিতে কাজ শুরু হবে। আমরা চেষ্টা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্প শেষ করতে।
এদিকে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আওয়াল জানিয়েছেন,
জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি আগামী দুই মাসের মধ্যে বিষয়টির সমাধান হবে।
ভুক্তভোগীদের দাবিঃ
এতদিনেও কাজ শুরু না হওয়ায় হতাশ সাধারণ মানুষ। তারা দ্রুত জমি অধিগ্রহণ ও প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করে ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ককে চলাচলের উপযোগী করে তোলার দাবি জানিয়েছেন।