বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, "আওয়ামী লীগের মিছিল যদি ভবিষ্যতে নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।" রাজধানীর বিমানবন্দর থানা পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় হুঁশিয়ারি
সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক মিছিল এবং তা ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকাকে কেন্দ্র করে নানা আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে এই কঠোর বার্তা সরকারী পর্যায়ে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত দেয়।
উপদেষ্টা বলেন, "আওয়ামী লীগের মিছিলের বিষয়ে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার প্রশ্নে আমরা দুইজনকে এরই মধ্যে আটক করেছি। আগামীতে যাতে তারা মিছিল করতে না পারে, সে জন্য পুলিশকে স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।"
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকার সচেষ্ট
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার নিয়মিত কাজ করছে। বিভিন্ন থানা পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, "পুলিশ সদস্যদের দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করতে আমরা নিয়মিত কাজ করছি। সুশৃঙ্খল সমাজ গঠনে পুলিশ বাহিনীকে আধুনিক ও মানবিক করে গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।"
বদলির পরও অবস্থান অপরিবর্তিত? সরকার বলছে ব্যবস্থা নেয়া হবে
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "যদি কোনো পুলিশ সদস্য বদলির পরও আগের জায়গায় অবস্থান করে থাকেন, তাহলে নির্দিষ্ট তথ্য পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।"
তিনি আরও বলেন, বদলির ক্ষেত্রে পরিবার থেকে দূরে থাকলে ছুটির সমস্যায় পড়েন পুলিশ সদস্যরা। এজন্য নীতিগতভাবে চেষ্টা চলছে যেন নিচের স্তরের পুলিশ সদস্যদের একই বিভাগে রাখা যায়, যাতে তাদের পারিবারিক জীবনে ভারসাম্য বজায় থাকে।
থানাগুলোর অবকাঠামো ও সদস্যদের জীবনমান উন্নয়নের উদ্যোগ
উপদেষ্টা জানান, থানা পরিদর্শনের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের থাকা-খাওয়ার অবস্থা সরেজমিনে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, "থানাগুলোর বাসস্থান এবং খাদ্যব্যবস্থা উন্নত করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা চাই, পুলিশ সদস্যরা স্বাচ্ছন্দ্যে ও মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারেন।"
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাম্প্রতিক বক্তব্য এবং উদ্যোগগুলো দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারের আগ্রহ ও সচেতনতাকে তুলে ধরেছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক দলের মিছিলের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা আরও কার্যকর করার লক্ষ্যে যে বার্তা দেয়া হয়েছে, তা প্রশাসনের কাঠামোয় একটি শক্ত অবস্থান নির্দেশ করে।
সরকার যদি কথার সাথে কাজের মিল রাখতে পারে, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও আস্থা উভয়ই বাড়বে— যা দেশের গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক দিক নির্দেশনা হতে পারে।