পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার বন্ধ চান অধিকাংশ মানুষ

পুলিশ সংস্কার কমিশনের জনমত জরিপে বাহিনীটির রাজনৈতিক ব্যবহার বন্ধ চেয়েছেন বেশিরভাগ মানুষ।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিচারবহির্ভূত হত্যায় জড়িতদের বিচার নিশ্চিতেও কমিশন চেয়েছেন সচেতন নাগরিকরা।

সংস্কার কমিশন জানিয়েছে, প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে জনমত জরিপকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে নতুন বছরের শুরুতেই তারা প্রতিবেদনটি জমা দিতে পারবেন বলে মনে করছেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের বিতর্কিত ভূমিকার জন্য পুলিশ বাহিনীর ব্যাপক সংস্কারের দাবি ওঠে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও বিষয়টি আমলে নিয়ে গত অক্টোবরে ৭ সদস্যের কমিশন গঠন করে।

কমিশন কাজ শুরু করেই পুলিশ সংস্কারে ‘কেমন পুলিশ চাই’? শীর্ষক জনমত জরিপ শুরু করে। ১৫ দিনের জরিপে প্রায় সাড়ে ২৪ হাজার মানুষ মতামত দিয়েছেন।

জরিপে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে বাহিনীটির রাজনৈতিক ব্যবহার বন্ধে। এরপর আছে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি বন্ধ এবং গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যায় দায়ী পুলিশের বিচারে কমিশন গঠন।

ট্রিপল নাইন সেবা, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, অলনাইন জিডিসহ পুলিশের ৮টি সেবাধর্মী কাজের গতি বাড়ানোরও সুপারিশ করা হয়েছে জরিপে। সংস্কার কমিশন বলছে, ৫৪ ধারার অপব্যবহার বন্ধের পক্ষে তারাও। একইসঙ্গে গায়েবি মামলা বন্ধের পাশাপাশি সভা-সমাবেশে মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগ এবং রিমান্ডে নির্যাতন বন্ধের সুপারিশও থাকবে কমিশনের প্রতিবেদনে।

পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য এ এস এম নাসিরউদ্দিন এলান বলেন, আলোচনার মধ্যে আমরা চেষ্টা করেছি এমন একটা সুপারিশ করতে পারি যাতে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত এবং জনগণের বন্ধু একটা পুলিশ দিতে পারি। জনমত জরিপকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই জমা দেয়া হবে।

তিনি বলেন, জরিপটা করেছিই জনগণের মতামত নেয়ার জন্য। মানুষ যে মতামতটা দিয়েছে সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারা ভুক্তভোগী হয়েই মতামত দিয়েছে। এই কারণে তাদের মতামতের ওপর আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা আশা করছি, জানুয়ারির ৫ তারিখে মধ্যে একটা প্রতিবেদন তৈরি করতে পারবো।

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নের কাজ অন্তর্বর্তী সরকারকেই শুরু করতে হবে মনে করেন সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক।

তিনি বলেন, কাঠামোগত যে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে সেটার বাস্তবায়ন শুরু করতে হবে। এর ফলাফল যখন মানুষ দেখতে শুরু করবে, তখন রাজনৈতিক দলের সরকার এলে তাদের জন্যও ধারাবাহিকতা বজায় রাখার একটা চাপ তৈরি হবে।