A L T R O Z   N E W S

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশের কার্গো পরিবহন সক্ষমতা বাড়ছে: ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে সরকার

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ হওয়ার পর বাংলাদেশের আকাশপথে কার্গো পরিবহন খাত নতুন এক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হলেও এটি একই সাথে একটি সুযোগ হিসেবেও দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এসব পদক্ষেপ দেশের আকাশপথে কার্গো পরিবহন সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক হতে সহায়তা করবে।

বিকল্প বিমানবন্দরের প্রস্তুতি: সিলেট-চট্টগ্রাম এখন গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের ফলে ঢাকা শহরের হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চাপ বেড়ে গেছে। এ কারণে সিলেটের ওসমানী এবং চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো পরিবহন কার্যক্রম দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২৭ এপ্রিল সিলেট থেকে প্রথম ইউরোপে পণ্য পরিবহন করা হবে, যা দেশের আকাশপথে কার্গো পরিবহনে একটি বড় পদক্ষেপ। চট্টগ্রাম এবং সিলেটের বিমানবন্দর দুটি দেশের আকাশপথের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কাজ করবে।

করোনাকালে ভারতের উপর নির্ভরতা

করোনাকালে ভারতের কলকাতা ও দিল্লি বিমানবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বিশ্ব বাজারে রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৩৪০০ টন পোশাক রপ্তানি করার মধ্যে ৬০০ টন যেত ভারত হয়ে। অর্থাৎ, ১৮ শতাংশ পণ্য ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার মাধ্যমে পরিবহন করা হত। তবে এখন ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ হওয়ায় বাংলাদেশের পণ্য সরাসরি আকাশপথে পরিবহন করা হচ্ছে।

ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধেও বন্ধ হয়নি রপ্তানি প্রবাহ

ভারতীয় ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ হওয়ার পরও বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবাহ থেমে থাকেনি। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৪০০০ টন পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স যেমন কাতার, এমিরেটস, টার্কিশ, সৌদিয়া, এবং ক্যাথে প্যাসিফিক বাংলাদেশ থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতি এবং শিল্পের জন্য নতুন সম্ভাবনার জন্ম হয়েছে।

সিলেট থেকে ইউরোপ: একটি বড় মাইলফলক

বাংলাদেশের আকাশপথে কার্গো পরিবহন খাতে আরও একটি মাইলফলক স্থাপন হবে ২৭ এপ্রিল সিলেট থেকে প্রথম ইউরোপে ৪০ টন পণ্য পাঠানোর মাধ্যমে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাফিকুর রহমান জানিয়েছেন, সিলেট থেকে প্রথম ফ্লাইটের মাধ্যমে ৪০ টন পোশাক ইউরোপে পাঠানো হবে। এটি দেশের বিমানবন্দরগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির এক বিশাল উদ্যোগ এবং আগামী দিনে আরও ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।

পিক সিজনে চাহিদা বাড়ে কয়েকগুণ

বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি খাতের জন্য পিক সিজন অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে রপ্তানি চাহিদা দ্বিগুণ হয়ে যায়, যা ১২০০ টন পর্যন্ত পৌঁছায়। ভারতীয় ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ হওয়ার আগে বাংলাদেশ এই চাহিদা মেটাতে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করত। তবে এখন দেশীয় বিমানবন্দরগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে এই চাহিদা পূরণ করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল: বদলে দিচ্ছে কার্গো হ্যান্ডলিং

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে দেশের কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষমতা আরও বাড়বে। বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দরের দুইটি টার্মিনাল মিলে বছরে ২ লাখ টন কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষম। তবে তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে এই সক্ষমতা বছরে ৫.৫ লাখ টনে পৌঁছাবে। এই পদক্ষেপ দেশের রপ্তানি খাতকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আকাশপথে পণ্য পরিবহনের খরচও কমবে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আধুনিকীকরণ ও প্রস্তুতি

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স দেশের বিমানবন্দরগুলোতে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা বাড়ানোর জন্য অত্যাধুনিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায় ১০০০ কোটি টাকার বেশি সরঞ্জাম কেনা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩২টি নতুন ইক্যুইপমেন্ট কেনা হয়েছে। এসব সরঞ্জাম সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং আরও জনবল নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

রেট কম, পরিষেবা উন্নত: বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতামূলক বাংলাদেশ

বর্তমানে ইউরোপে প্রতি কেজি কার্গোর হ্যান্ডলিং রেট ২.৭০ থেকে ২.৮০ ডলার হলেও বাংলাদেশের শাহজালাল বিমানবন্দরের রেট আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। বিএএফএফএ সভাপতি কবির আহমেদ জানান, বিমান কর্তৃপক্ষ এই খরচ কমানোর চেষ্টা করছে এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে খরচের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনার উদ্যোগ গ্রহণ করছে।

সরকার ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় জরুরি

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি খায়রুল কবির সুজন বলেন, “এখন সময় এসেছে আমাদের আকাশপথ এবং লজিস্টিক সুবিধাগুলো সর্বোচ্চ ব্যবহার করার।” তিনি আরও বলেন, “সরকার এবং বেসরকারি খাত একসাথে কাজ করলে আমাদের আর বিদেশি রুটের উপর নির্ভর করতে হবে না। বাংলাদেশের আকাশপথ এবং লজিস্টিক খাত এক নতুন দিকে এগিয়ে যাবে।”

ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ: সমস্যা নয়, বরং সম্ভাবনার সূচনা

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, “ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের পর, এটি আমাদের জন্য একটি সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এখন আমরা নিজেদের সক্ষমতায় আন্তর্জাতিক বাজারে কার্গো পণ্য পরিবহন করতে পারছি। এর ফলে দেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে এবং পণ্য পরিবহনে সময় এবং খরচ কমবে।”

এই উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশ আকাশপথে কার্গো পরিবহন খাতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছে। এটি দেশের অর্থনীতি এবং বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অবস্থান আরও মজবুত করবে।

সংবাদ প্রবাহ

বাংলাদেশের কার্গো পরিবহন সক্ষমতা বাড়ছে: ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে সরকার

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ হওয়ার পর বাংলাদেশের আকাশপথে কার্গো পরিবহন খাত নতুন এক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হলেও এটি একই সাথে একটি সুযোগ হিসেবেও দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এসব পদক্ষেপ দেশের আকাশপথে কার্গো পরিবহন সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক হতে সহায়তা করবে।

বিকল্প বিমানবন্দরের প্রস্তুতি: সিলেট-চট্টগ্রাম এখন গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের ফলে ঢাকা শহরের হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চাপ বেড়ে গেছে। এ কারণে সিলেটের ওসমানী এবং চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো পরিবহন কার্যক্রম দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২৭ এপ্রিল সিলেট থেকে প্রথম ইউরোপে পণ্য পরিবহন করা হবে, যা দেশের আকাশপথে কার্গো পরিবহনে একটি বড় পদক্ষেপ। চট্টগ্রাম এবং সিলেটের বিমানবন্দর দুটি দেশের আকাশপথের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কাজ করবে।

করোনাকালে ভারতের উপর নির্ভরতা

করোনাকালে ভারতের কলকাতা ও দিল্লি বিমানবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বিশ্ব বাজারে রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৩৪০০ টন পোশাক রপ্তানি করার মধ্যে ৬০০ টন যেত ভারত হয়ে। অর্থাৎ, ১৮ শতাংশ পণ্য ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার মাধ্যমে পরিবহন করা হত। তবে এখন ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ হওয়ায় বাংলাদেশের পণ্য সরাসরি আকাশপথে পরিবহন করা হচ্ছে।

ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধেও বন্ধ হয়নি রপ্তানি প্রবাহ

ভারতীয় ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ হওয়ার পরও বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবাহ থেমে থাকেনি। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৪০০০ টন পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স যেমন কাতার, এমিরেটস, টার্কিশ, সৌদিয়া, এবং ক্যাথে প্যাসিফিক বাংলাদেশ থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতি এবং শিল্পের জন্য নতুন সম্ভাবনার জন্ম হয়েছে।

সিলেট থেকে ইউরোপ: একটি বড় মাইলফলক

বাংলাদেশের আকাশপথে কার্গো পরিবহন খাতে আরও একটি মাইলফলক স্থাপন হবে ২৭ এপ্রিল সিলেট থেকে প্রথম ইউরোপে ৪০ টন পণ্য পাঠানোর মাধ্যমে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাফিকুর রহমান জানিয়েছেন, সিলেট থেকে প্রথম ফ্লাইটের মাধ্যমে ৪০ টন পোশাক ইউরোপে পাঠানো হবে। এটি দেশের বিমানবন্দরগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির এক বিশাল উদ্যোগ এবং আগামী দিনে আরও ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।

পিক সিজনে চাহিদা বাড়ে কয়েকগুণ

বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি খাতের জন্য পিক সিজন অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে রপ্তানি চাহিদা দ্বিগুণ হয়ে যায়, যা ১২০০ টন পর্যন্ত পৌঁছায়। ভারতীয় ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ হওয়ার আগে বাংলাদেশ এই চাহিদা মেটাতে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করত। তবে এখন দেশীয় বিমানবন্দরগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে এই চাহিদা পূরণ করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল: বদলে দিচ্ছে কার্গো হ্যান্ডলিং

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে দেশের কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষমতা আরও বাড়বে। বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দরের দুইটি টার্মিনাল মিলে বছরে ২ লাখ টন কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষম। তবে তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে এই সক্ষমতা বছরে ৫.৫ লাখ টনে পৌঁছাবে। এই পদক্ষেপ দেশের রপ্তানি খাতকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আকাশপথে পণ্য পরিবহনের খরচও কমবে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আধুনিকীকরণ ও প্রস্তুতি

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স দেশের বিমানবন্দরগুলোতে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা বাড়ানোর জন্য অত্যাধুনিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায় ১০০০ কোটি টাকার বেশি সরঞ্জাম কেনা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩২টি নতুন ইক্যুইপমেন্ট কেনা হয়েছে। এসব সরঞ্জাম সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং আরও জনবল নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

রেট কম, পরিষেবা উন্নত: বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতামূলক বাংলাদেশ

বর্তমানে ইউরোপে প্রতি কেজি কার্গোর হ্যান্ডলিং রেট ২.৭০ থেকে ২.৮০ ডলার হলেও বাংলাদেশের শাহজালাল বিমানবন্দরের রেট আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। বিএএফএফএ সভাপতি কবির আহমেদ জানান, বিমান কর্তৃপক্ষ এই খরচ কমানোর চেষ্টা করছে এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে খরচের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনার উদ্যোগ গ্রহণ করছে।

সরকার ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় জরুরি

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি খায়রুল কবির সুজন বলেন, “এখন সময় এসেছে আমাদের আকাশপথ এবং লজিস্টিক সুবিধাগুলো সর্বোচ্চ ব্যবহার করার।” তিনি আরও বলেন, “সরকার এবং বেসরকারি খাত একসাথে কাজ করলে আমাদের আর বিদেশি রুটের উপর নির্ভর করতে হবে না। বাংলাদেশের আকাশপথ এবং লজিস্টিক খাত এক নতুন দিকে এগিয়ে যাবে।”

ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ: সমস্যা নয়, বরং সম্ভাবনার সূচনা

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, “ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের পর, এটি আমাদের জন্য একটি সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এখন আমরা নিজেদের সক্ষমতায় আন্তর্জাতিক বাজারে কার্গো পণ্য পরিবহন করতে পারছি। এর ফলে দেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে এবং পণ্য পরিবহনে সময় এবং খরচ কমবে।”

এই উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশ আকাশপথে কার্গো পরিবহন খাতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছে। এটি দেশের অর্থনীতি এবং বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অবস্থান আরও মজবুত করবে।

বাংলাদেশের সঙ্গে এলএনজি চুক্তি নবায়ন করবে কাতার

বাংলাদেশ ও কাতার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) সরবরাহ চুক্তি নবায়নের মাধ্যমে। সম্প্রতি দোহায় অনুষ্ঠিত ‘আর্থনা সামিট’-এর সাইডলাইনে এই সিদ্ধান্ত আসে, যেখানে কাতারের জ্বালানিমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আলোচনায় উঠে আসে কেবল বিদ্যমান সমঝোতা স্মারক (MoU) নবায়ন নয়, বরং ভবিষ্যতের জ্বালানি নিরাপত্তা ও অবকাঠামো নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার সম্ভাবনা।

দীর্ঘমেয়াদি SPA ও MoU নবায়নের প্রেক্ষাপট

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ও কাতার G2G ভিত্তিক একটি Sales and Purchase Agreement (SPA) স্বাক্ষর করে। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ প্রতি বছর ১.৫ থেকে ২.৫ মিলিয়ন টন এলএনজি আমদানি করে থাকে। প্রতি বছর প্রায় ৪০টি এলএনজি কার্গো এভাবে সরবরাহ করা হয়।

২০২৩ সালে নতুন আরেকটি SPA সই হয়, যার কার্যকারিতা শুরু হবে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে। এই নতুন চুক্তির আওতায় আরও ১.৫ মিলিয়ন টন এলএনজি আমদানি করা হবে প্রতি বছর। এই SPA-এর সাপোর্টিং MoU ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়, যার নবায়নের প্রতিশ্রুতি কাতার দিয়েছে।

কাতারের প্রতিশ্রুতি: সহযোগিতা আরও গভীর হবে

কাতারের জ্বালানিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সাদ বিন শেরিদা আল কাবি বলেন, "আমরা শুধু বাংলাদেশে গ্যাস সরবরাহ করতে চাই না, বরং এই খাতে বাংলাদেশের সাথে টেকসই অংশীদারত্ব গড়তে চাই।" তিনি আরও জানান, কাতার তাদের এলএনজি উৎপাদন দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এর ফলে আগামীতে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমতে পারে, যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত লাভজনক হবে।

বাংলাদেশের পরিকল্পনা: স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল

বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে মাতারবাড়ী, কক্সবাজারে একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। বর্তমানে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল দিয়ে দেশে বছরে ১১৫টি কার্গো হ্যান্ডল করা সম্ভব হচ্ছে। তবে এই সক্ষমতা ভবিষ্যতে চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট নয়।

স্থলভিত্তিক টার্মিনালের মাধ্যমে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরাসরি গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে, যা বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিল্প ও আবাসিক ব্যবহারকারীদের জন্য সুবিধাজনক হবে। এই টার্মিনাল থেকে রিগ্যাসিফায়েড এলএনজি (RLNG) সরবরাহ করা হবে, যা বর্তমান এলএনজি ব্যবস্থার চেয়ে আরও স্থায়ী ও ব্যয়সাশ্রয়ী হবে।

ইউরিয়া সার সরবরাহেও কাতারের আগ্রহ

এলএনজির পাশাপাশি কাতার বাংলাদেশে ইউরিয়া সার সরবরাহ বাড়াতে চায়। দেশের কৃষিখাত ইউরিয়া সার নির্ভর, এবং বছরে কয়েক মিলিয়ন টন সার আমদানি করা হয়। কাতারের প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে আমরা ভূমিকা রাখতে আগ্রহী।”

উচ্চপর্যায়ের উপস্থিতি: বৈঠকের গুরুত্ব

এই বৈঠকে কেবল দুই দেশের প্রধান উপদেষ্টা নয়, উপস্থিত ছিলেন আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। যেমন—পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ, টেকসই উন্নয়ন সচিব লামিয়া মোর্শেদ এবং জ্বালানি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। এ থেকেই বোঝা যায়, এই আলোচনা কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের।

জ্বালানি নিরাপত্তা ও কৌশলগত প্রয়োজন

বাংলাদেশে গ্যাস একটি প্রাথমিক জ্বালানি উৎস, বিশেষ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্পখাতে। দেশীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদন ক্রমাগত কমে যাচ্ছে, ফলে আমদানি নির্ভরতা বেড়ে চলেছে। বর্তমানে দৈনিক প্রায় ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি হচ্ছে, এবং এই পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে কাতারের মতো নির্ভরযোগ্য দেশ থেকে এলএনজি সরবরাহ একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির মাধ্যমে বাজারে অস্থিরতা কমানো এবং মূল্য নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব হবে।

ভবিষ্যতের রূপরেখা

বাংলাদেশ ও কাতার দু’দেশই বুঝতে পেরেছে যে একে অপরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। কাতারের টেকনিক্যাল সক্ষমতা, অভিজ্ঞতা এবং উচ্চমানের গ্যাস উৎপাদন বাংলাদেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। অন্যদিকে বাংলাদেশ একটি উদীয়মান অর্থনীতি, যেখানে জ্বালানি একটি মৌলিক চালিকাশক্তি।

দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা শুধু বাণিজ্যিক নয়, বরং কৌশলগত। এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশ জ্বালানি খাতে যেমন আত্মনির্ভর হতে পারবে, তেমনি বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়ও সম্ভব হবে।

অজুর সময় নারীদের মাথায় ওড়না রাখা কি জরুরি? ইসলাম কী বলে?

অজু ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা নামাজের পূর্বশর্ত হিসেবে পালন করা হয়। অনেকেই জানতে চান, অজুর সময় নারীদের জন্য মাথায় ওড়না রাখা কি আবশ্যক? এই প্রশ্নের উত্তরে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি সহজ ও স্পষ্ট।


অজুর সঙ্গে মাথায় ওড়না রাখার সম্পর্ক নেই

নারীদের মাথায় ওড়না রাখা বা সতর ঢাকা অজুর শর্ত নয়। অর্থাৎ, কোনো নারী যদি ওড়না ছাড়া অজু করেন, তবুও তার অজু সম্পূর্ণ শুদ্ধ হবে। শরিয়তে এমন কোনো বিধান নেই যা বলে যে, অজুর সময় মাথায় ওড়না রাখা ফরজ, ওয়াজিব বা এমনকি মুস্তাহাব (উত্তম)।

অতএব, নারীরা ওড়না রেখে কিংবা না রেখে অজু করতে পারেন, যদি তারা এমন স্থানে থাকেন যেখানে কোনো পরপুরুষের দৃষ্টি পড়ার সম্ভাবনা না থাকে এবং পর্দা ভঙ্গ হওয়ার কোনো ঝুঁকি না থাকে।


পরপুরুষের সামনে হলে সতর্কতা জরুরি

যদি কোনো নারী বিশেষ কোনো কারণে পরপুরুষের সামনে অজু করতে বাধ্য হন, তাহলে ইসলামের ফরজ বিধান পর্দা অনুযায়ী নিজেকে যথাসম্ভব আবৃত রাখা ফরজ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে অজুর সময় মাথায় ওড়না রাখা উচিত এবং শরীরের অন্যান্য অংশও যথাসম্ভব ঢেকে রাখতে হবে।


ইসলামে পর্দার গুরুত্ব

ইসলামে নারীর জন্য পর্দা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। আল্লাহ তাআলা কোরআনে পুরুষ ও নারীর দৃষ্টির হেফাজত এবং লজ্জাস্থানের সংরক্ষণ সম্পর্কে নির্দেশ দিয়েছেন। নিচে সুরা নূরের দুটি আয়াত তুলে ধরা হলো, যা এই বিষয়ে ইসলামের স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেয়।

“মুমিন পুরুষদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে, সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত।”
(সুরা নূর, আয়াত ৩০)

“আর মুমিন নারীদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে এবং তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে…”
(সুরা নূর, আয়াত ৩১)

এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা নারীদেরকে নির্দিষ্ট কিছু আত্মীয় ছাড়া কারো সামনে সৌন্দর্য প্রকাশ করতে নিষেধ করেছেন এবং ওড়না দিয়ে বক্ষ আবৃত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।


কাদের সামনে পর্দা ফরজ নয়?

নিচের আত্মীয়দের সামনে নারী পর্দা শিথিল করতে পারেন, তবে শালীনতা বজায় রাখতে হয়:

  • স্বামী

  • পিতা

  • শ্বশুর

  • নিজ সন্তান

  • স্বামীর সন্তান

  • ভাই

  • ভাইয়ের ছেলে

  • বোনের ছেলে

  • আপন নারীগণ

  • অধীনস্থ দাস/দাসী

  • যৌনকামনামুক্ত পুরুষ

  • অজ্ঞ বালক (যারা নারীর গোপন সৌন্দর্য বোঝে না)


উপসংহার: অজু ও পর্দা – আলাদা দুটি বিষয়

সারাংশে বলা যায়, অজুর সময় নারীদের মাথায় ওড়না রাখা অজুর অংশ নয়। তবে পরপুরুষের সামনে পর্দা রক্ষা করা ফরজ, এবং তখন ওড়না রাখা আবশ্যক হয়ে যায়। তাই, অবস্থান ও পরিস্থিতি বিবেচনায় অজুর সময় মাথায় ওড়না রাখার প্রয়োজনীয়তা নির্ভর করে।

মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সাবেক মন্ত্রীসহ ১৬ জনের হাজিরা: ট্রাইব্যুনাল এলাকায় কড়া নিরাপত্তা

জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত সাবেক ১২ মন্ত্রী ও ৪ উপদেষ্টাসহ মোট ১৬ জনকে আজ (২০ এপ্রিল, রোববার) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের আদলে যুদ্ধাপরাধ আইন অনুযায়ী বিচারিক কার্যক্রম শুরু করার প্রক্রিয়া চলছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে সকাল থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। পুরো এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে পুলিশ ও র‍্যাব সদস্যদের দ্বারা। এমনকি সংবাদমাধ্যম এবং সংশ্লিষ্টদের ট্রাইব্যুনালে প্রবেশেও নিরাপত্তা যাচাই প্রক্রিয়া কঠোরভাবে পালন করা হয়েছে।


যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

এই ১৬ জনের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপদেষ্টা এবং প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের সাবেক কর্মকর্তারা। এরা হলেন:

  • আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী: আনিসুল হক, ফারুক খান, দীপু মনি, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, আমির হোসেন আমু, কামরুল ইসলাম

  • ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি: রাশেদ খান মেনন

  • জাসদ সভাপতি: হাসানুল হক ইনু

  • সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা: তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সালমান এফ রহমান

  • সাবেক প্রতিমন্ত্রী: কামাল আহমেদ মজুমদার, জুনায়েদ আহমেদ পলক

  • আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি: এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক

  • সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব: জাহাংগীর আলম

তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা, গুম, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।


তদন্তের অগ্রগতি ও প্রসিকিউশনের অবস্থান

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই ১৬ জনকে হাজির করার দিন নির্ধারণ করে। প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ জানান, “এই ১৬ জনকে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম অনেকটাই অগ্রসর হয়েছে।”

এছাড়া, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদনও আজ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হচ্ছে। এ বিষয়ে শুনানি হবে ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে, যেটির নেতৃত্বে আছেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার। অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর জানা যাবে তদন্ত সম্পূর্ণ হয়েছে কি না, কিংবা আরও সময় প্রয়োজন কি না।


পূর্বপ্রেক্ষাপট

গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত গণহত্যার অভিযোগে ১২ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, ২ উপদেষ্টা, এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এরপর তাদের শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয় এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি তাদের হাজির করার আদেশ আসে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দীর্ঘদিন ধরেই মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করে আসছে। তবে এই প্রথমবার এত বড় সংখ্যক সাবেক মন্ত্রী এবং প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের একসঙ্গে অভিযুক্ত করা হলো।


নিরাপত্তা ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে অভিযুক্তদের মধ্যে সরকারদলীয় সাবেক নেতাদের থাকা রাজনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে চলছে নানা বিতর্ক ও বিশ্লেষণ।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এলাকায় ভোর থেকেই কড়া নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলেন, “আমরা সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি যাতে শান্তিপূর্ণভাবে বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।”


পরবর্তী পদক্ষেপ

আসামিদের আজ আদালতে হাজির করা হলেও এখনই তাদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হবে না। প্রথমে তদন্ত প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করা হবে, এরপর অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। যদি ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গ্রহণ করে, তখন বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে।

তদন্তে যদি প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে এই ১৬ জনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ আইনে সর্বোচ্চ সাজা হতে পারে মৃত্যুদণ্ড। তবে সবকিছু নির্ভর করবে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের উপর।

এ ধরনের একটি ঘটনা বাংলাদেশের আইনি ও রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সাবেক মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তদন্ত ও বিচারিক প্রক্রিয়ার অংশ হওয়া নিঃসন্দেহে একটি বড় পদক্ষেপ। এ ঘটনার বিচার সঠিকভাবে সম্পন্ন হলে তা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হবে।

আ’লীগের মিছিল বন্ধ করতে না পারলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, "আওয়ামী লীগের মিছিল যদি ভবিষ্যতে নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।" রাজধানীর বিমানবন্দর থানা পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।


পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় হুঁশিয়ারি

সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক মিছিল এবং তা ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকাকে কেন্দ্র করে নানা আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে এই কঠোর বার্তা সরকারী পর্যায়ে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত দেয়।

উপদেষ্টা বলেন, "আওয়ামী লীগের মিছিলের বিষয়ে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার প্রশ্নে আমরা দুইজনকে এরই মধ্যে আটক করেছি। আগামীতে যাতে তারা মিছিল করতে না পারে, সে জন্য পুলিশকে স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।"


আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকার সচেষ্ট

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার নিয়মিত কাজ করছে। বিভিন্ন থানা পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, "পুলিশ সদস্যদের দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করতে আমরা নিয়মিত কাজ করছি। সুশৃঙ্খল সমাজ গঠনে পুলিশ বাহিনীকে আধুনিক ও মানবিক করে গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।"


বদলির পরও অবস্থান অপরিবর্তিত? সরকার বলছে ব্যবস্থা নেয়া হবে

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "যদি কোনো পুলিশ সদস্য বদলির পরও আগের জায়গায় অবস্থান করে থাকেন, তাহলে নির্দিষ্ট তথ্য পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।"

তিনি আরও বলেন, বদলির ক্ষেত্রে পরিবার থেকে দূরে থাকলে ছুটির সমস্যায় পড়েন পুলিশ সদস্যরা। এজন্য নীতিগতভাবে চেষ্টা চলছে যেন নিচের স্তরের পুলিশ সদস্যদের একই বিভাগে রাখা যায়, যাতে তাদের পারিবারিক জীবনে ভারসাম্য বজায় থাকে।


থানাগুলোর অবকাঠামো ও সদস্যদের জীবনমান উন্নয়নের উদ্যোগ

উপদেষ্টা জানান, থানা পরিদর্শনের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের থাকা-খাওয়ার অবস্থা সরেজমিনে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, "থানাগুলোর বাসস্থান এবং খাদ্যব্যবস্থা উন্নত করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা চাই, পুলিশ সদস্যরা স্বাচ্ছন্দ্যে ও মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারেন।"

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাম্প্রতিক বক্তব্য এবং উদ্যোগগুলো দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারের আগ্রহ ও সচেতনতাকে তুলে ধরেছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক দলের মিছিলের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা আরও কার্যকর করার লক্ষ্যে যে বার্তা দেয়া হয়েছে, তা প্রশাসনের কাঠামোয় একটি শক্ত অবস্থান নির্দেশ করে।

সরকার যদি কথার সাথে কাজের মিল রাখতে পারে, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও আস্থা উভয়ই বাড়বে— যা দেশের গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক দিক নির্দেশনা হতে পারে।

ইতিহাসের সেরা নির্বাচন হবে বাংলাদেশে: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় রচনার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, "আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে দেশের ইতিহাসের সর্বোত্তম নির্বাচন। এটি গণতান্ত্রিক যাত্রার একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।"

শনিবার, ১৯ এপ্রিল, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন। এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (ANFREL) নামক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


কী বলেছে প্রধান উপদেষ্টা?

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, "এই নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক। আমরা এমন একটি নির্বাচন আয়োজন করতে চাই যা দেশের জনগণের আস্থা অর্জন করবে এবং গণতন্ত্রকে আরও দৃঢ় করবে।"


কারা ছিলেন এই সাক্ষাতে?

সাক্ষাতে অংশ নেন ANFREL-এর নির্বাহী পরিচালক ব্রিজা রোসালেস, পরামর্শক মে বুটয়, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার থারিন্ডু আবেরত্না, প্রোগ্রাম অফিসার আয়ান রহমান খান এবং প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট আফসানা আমেই।


কী বলেছে ANFREL?

এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (ANFREL) দীর্ঘ দুই দশক ধরে এশিয়াজুড়ে সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক সংস্কারের লক্ষ্যে কাজ করছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তারা যে বিষয়গুলো তুলে ধরে তা হলো:

  • নাগরিকচালিত নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা পুনর্গঠন

  • স্টেকহোল্ডার ম্যাপিং

  • সুশীল সমাজের সম্পৃক্ততা

  • নির্বাচনী স্বচ্ছতা বৃদ্ধির উদ্যোগ

তারা জানান, এসব পদক্ষেপ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়ক হবে।


আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণের গুরুত্ব

ANFREL-এর প্রতিনিধিরা উল্লেখ করেন যে, তারা বাংলাদেশে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে আন্তরিকভাবে কাজ করে যেতে আগ্রহী। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকল স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে প্রস্তুত তারা।


কেন এই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ?

বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ইতিহাসে প্রতিটি নির্বাচনই গুরুত্বপূর্ণ। তবে আগামী নির্বাচনকে ঘিরে যে প্রস্তুতি ও আন্তরিকতার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তা দেশের গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য আশার আলো হয়ে উঠেছে।

আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ইতিবাচক বার্তা এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের আগ্রহ — উভয়ই দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য শুভসংকেত। যদি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয়, তবে এটি শুধু একটি নির্বাচন নয়; বরং বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।

সাত গম্বুজ মসজিদ ও অজানা সমাধির গল্প

ঢাকার জমজমাট জীবনের ভিড় থেকে সরে এসে আড়ম্বরহীন শান্তির খুঁজে পেতে পারলেন কি? শুক্রবারের কোনো এক ঝলমলে ছুটির দিনে মোহাম্মদপুরে ঘুরে আসুন দুই নীরব প্রত্যক্ষদর্শীর কাছে—সাত গম্বুজ মসজিদ ও তার স্নেহঢাকা ‘অজানা সমাধি’। ইতিহাসের পাতায় যে অধ্যায়গুলো আজো অমলিন, সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে এই দুই স্মৃতিস্তম্ভ।


ইতিহাসের পাতায় সাত গম্বুজ মসজিদ

১৬৮০ খ্রিস্টাব্দে মোঘল সাম্রাজ্যের সুবেদার শায়েস্তা খাঁর প্রভুত্ব বাংলা আখ্যায়িত ছিল শান্তিময়। তাঁর পুত্র উমিদ খাঁ মোগল স্থাপত্যরীতিতে মোহাম্মদপুরে নির্মাণ করেন এক বুড়িৎ নিদর্শন—সাত গম্বুজ মসজিদ। লাল বাগ দুর্গ মসজিদ ও খাজা আম্বর মসজিদের শৈলীতে এ মসজিদ স্থাপন করা হয়েছিল। ১৫ ফুট উঁচু প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আছে এ মসজিদ; দেড় শতকের বেশি সময় পার হলেও এর লাল ইটের অলঙ্কার আজো আভিজাত্য আবিষ্কার করে।

মসজিদের ছাদে তিনটি বড় গম্বুজ—মগ্র মরুভূমির সমতলে নজিরবিহীন আর চার কোণে ছোট গম্বুজ চারটি, যা স্থাপত্যগত ভারসাম্য বজায় রাখে। চার কোণে মিনার, টার্নিং খিলান, ইটের কারুকাজ ও খচিত মেহরাব— সবই সেই সময়কার শিল্পীর দক্ষতার সাক্ষ্য বহন করে। মসজিদের দেয়ালে সিমেট্রিকাল খিলান, অষ্টধাতু খিলঞ্জি ও জ্যামিতিক নকশা মুগ্ধ করে প্রতিটি দর্শককে।

মসজিদের অভ্যন্তরে প্রার্থনার স্থান চার সারিতে সাজানো। প্রায় ৯০ জন মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে। এর সামনের প্রশস্ত বারান্দা ও উদ্যান এককালের বুড়িগঙ্গা তীরবর্তী গঞ্জনা স্মরণ করিয়ে দেয়, যখন লঞ্চ-স্টিমাররা ধারে ঘাট জমজমাট করে যেত। আজ সে গমগম হারিয়ে গেলেও স্মৃতিস্তম্ভ নিজ রূপে অব্যাহত।


অজানা সমাধির রহস্য

মসজিদ থেকে মাত্র কয়েকশো গজ দূরে আছে এক ‘অজানা সমাধি’। স্থানীয়দের কাছে ‘বিবির মাজার’ নামেও পরিচিত। বাইরের দিকে চতুষ্কোণ আকৃতির এ সমাধি, ভেতরে অষ্টকোণাকার—মোগল ধাঁচের একটি ছোট গম্বুজ বেষ্টিত। কার কবর, সম্রাটদের কোনো ডায়েরি না থাকায় জানা আজও কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। ইতিহাসবিদদের অনুমান, হয়তো মসজিদের কোনো বরেণ্য মুসলিম নেতা বা সুফি সাধকের সমাধি, আবার কেউ কেউ বলেন, শায়েস্তা খাঁর কন্যার مساادى হতে পারে।

বহুকাল পরিত্যক্ত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত এ স্থানের পুনরুদ্ধার হয় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে আজ এটি নতুন রূপে দাঁড়িয়ে আছে। পুরনো পাচঁ-ছয়টি ইটের পাত ভেঙে যেতে যেতে আজাব দাঁড়িয়ে থাকা মাটির প্রাচীরগুলোতে আবার সাজাল বেহালকার, যেন ইতিহাসের কণ্ঠস্বর ঘুরে ফিরে আসে প্রত্যেক দিক থেকে।


দর্শনীয় স্থান ও সুবিধা

অবস্থান ও যাতায়াত

মোহাম্মদপুর রিং রোড ধরে মণিপুরীপাড়া বা বসিলা রোডের দিকে আসলেই চোখে পড়বে সূক্ষ্ম সাইনবোর্ড। সরু গলি পেরিয়ে প্রবেশের পর সামনে মসজিদ, পাশেই সমাধি—সবই এক চাহনিে।

  • ব্যক্তিগত যানবাহন: রিং রোড থেকে সহজেই উল্টে ছোট রাস্তা দিয়ে প্রবেশ

  • রিকশা: মোহনপুর পয়েন্ট বা রিং রোডের যেকোনো পয়েন্ট থেকে রিকশায় ১০–১৫ মিনিটে পৌঁছানো যায়

  • পার্কিং: সামান্য স্থান থাকলেও বাইকে পার্কিং সুবিধা রয়েছে

আশেপাশের আকর্ষণ

  • লালমাটিয়া ও তাজমহল রোড: এখানের কাবাব, চাপ, বিরিয়ানি বিখ্যাত—দু’মুঠো খাবারে ভ্রমণী ক্লান্তি ভুলিয়ে দেবে

  • বুড়িগঙ্গা ঘাট: পূর্বজলের স্মৃতি ধরে রাখা ঘাটের ধারে একটি নীরব উদ্যান


পরিদর্শন পরামর্শ

  1. সময় নির্বাচন: সকালবেলায় সূর্য ওঠার আগে বা বিকেলের হালকা আলোতে মসজিদ ও সমাধি পরিদর্শন উপভোগ্য

  2. পোষাক: ধর্মীয় স্থান হওয়ায় লম্বা, ঢাকনো পোশাক পরিধান করলে সম্মানজনক হয়

  3. ফটোগ্রাফি: স্থাপত্যের অলঙ্কার, খিলান ও মিনারের ডিটেইল শুট করতে পৌঁছে

  4. গাইড: স্থানীয় উপাখ্যায়ি বা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের গাইড থাকলে ইতিহাস বোঝা সহজ


উপসংহার

ঢাকার কোলাহল থেকে বিচ্ছিন্ন এই নিস্তব্ধ স্থানে দাঁড়ালে মনে হবে একরাশ ইতিহাসের নিঃশব্দ সাক্ষী সামনে। সাত গম্বুজ মসজিদের সুউচ্চ ইটের কারুকাজ, তার পাশের অজানা সমাধির রহস্যময়তা—সবই মানুষকে অতীতের অমলিন অধ্যায়ে পা রাখতে উদ্বুদ্ধ করে। একদিনের ছুটিতে বা সপ্তাহান্তের কোনো সকালে এই দুই নিদর্শন আড্ডা দিতে আসা মানে কেবল ভ্রমণ নয়; ইতিহাসের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতা।

হোয়াটসঅ্যাপ স্টোরেজ খালি করার সহজ উপায়

বর্তমান সময়ে হোয়াটসঅ্যাপ এক অন্যতম জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশন, যা প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে ব্যক্তি, পরিবার, বন্ধুবান্ধব কিংবা কর্মক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বার্তা আদান-প্রদান করা হয়। তবে, যখন ফোনে অনেক মিডিয়া ফাইল (ছবি, ভিডিও, ডকুমেন্ট ইত্যাদি) জমা হতে থাকে, তখন তা ফোনের স্টোরেজে অতিরিক্ত চাপ তৈরি করে। এর ফলে ফোনে স্টোরেজের সমস্যা হতে পারে, এবং কিছু ক্ষেত্রে মেসেজ সেন্ড বা রিসিভ করার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই হোয়াটসঅ্যাপের স্টোরেজ খালি করার জন্য কিছু সহজ উপায় জানা প্রয়োজন।

হোয়াটসঅ্যাপের অটো-ডাউনলোড অপশন বন্ধ করা

হোয়াটসঅ্যাপে ফাইল ডাউনলোডের জন্য সাধারণত অটো-ডাউনলোড অপশন চালু থাকে। যার ফলে, সব মিডিয়া ফাইল (ছবি, ভিডিও, ডকুমেন্ট) আপনার ফোনে অটো সেভ হয়ে যায়। এর ফলে আপনার ফোনের গ্যালারি অপ্রয়োজনীয় মিডিয়া ফাইলে পূর্ণ হয়ে যেতে পারে, যা আপনার স্টোরেজের বড় একটি অংশ দখল করে নেয়। হোয়াটসঅ্যাপে এই অটো-ডাউনলোড অপশন বন্ধ করলে আপনি নিজের গ্যালারি স্টোরেজকে বেশ খানিকটা খালি রাখতে পারবেন। নিচে ধাপে ধাপে দেখানো হলো কিভাবে এই অপশন বন্ধ করা যায়:

  1. হোয়াটসঅ্যাপ খুলুন: প্রথমে আপনার ডিভাইসে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপটি খুলুন।

  2. থ্রি-ডট মেন্যু থেকে সেটিংসে যান: উপরের ডান দিকের কোণে থ্রি-ডট মেন্যু আইকনে ক্লিক করুন এবং সেটিংস অপশনে যান।

  3. ডাটা অ্যান্ড স্টোরেজ ইউসেজে ক্লিক করুন: এরপর ডাটা অ্যান্ড স্টোরেজ ইউসেজ অপশনে ক্লিক করুন। এখানে আপনি অটো ডাউনলোডের অপশন পাবেন।

  4. মিডিয়া ডাউনলোড অপশন বন্ধ করুন: আপনি "অটো ডাউনলোড মিডিয়া" অপশন থেকে "ভিডিও", "অডিও", এবং "ডকুমেন্ট" এর জন্য অটো ডাউনলোড বন্ধ করতে পারবেন। এখানে আপনি ওয়াই-ফাই অথবা মোবাইল ডাটা স্যুইচের উপর নির্ভর করে অটো ডাউনলোড অপশনটি বন্ধ বা চালু করতে পারেন।

এই পরিবর্তন করার পর, আপনার ফোনে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে যে কোনো নতুন মিডিয়া ফাইল ডাউনলোড হবে না, যদি না আপনি নিজে সেগুলি ডাউনলোড করেন। ফলে অপ্রয়োজনীয় মিডিয়া গ্যালারিতে সেভ হবে না এবং আপনার ফোনের স্টোরেজে আর কোনো সমস্যা হবে না।

মিডিয়া ভিজিবিলিটি বন্ধ করা

যদিও আপনি অটো-ডাউনলোড বন্ধ করেছেন, তবুও পুরনো মিডিয়া ফাইলগুলো আপনার গ্যালারিতে থাকতে পারে। তবে, আপনি হোয়াটসঅ্যাপে মিডিয়া ভিজিবিলিটি অপশনটি বন্ধ করে রাখতে পারেন, যাতে নতুন মিডিয়া ফাইল গ্যালারিতে প্রদর্শিত না হয়। এই অপশনটি বন্ধ করলে, শুধুমাত্র সেই মিডিয়া ফাইলগুলো আপনার গ্যালারিতে থাকবে যা আপনি নিজে হাতে ডাউনলোড করবেন। এটি করতে হলে:

  1. সেটিংসে যান: হোয়াটসঅ্যাপ খুলে, সেটিংস অপশনে ক্লিক করুন।

  2. চ্যাট অপশনে যান: এরপর চ্যাট অপশনে ক্লিক করুন এবং সেখানে মিডিয়া ভিজিবিলিটি অপশনটি বন্ধ করে দিন। এর ফলে, নতুন মিডিয়া ফাইল গ্যালারিতে প্রদর্শিত হবে না।

এটি বিশেষভাবে কার্যকর হবে যদি আপনি কিছু নির্দিষ্ট চ্যাট থেকে এক্সট্রা মিডিয়া ফাইল সেভ করতে চান না। এতে আপনার ফোনের গ্যালারি আরও সুশৃঙ্খল এবং পরিষ্কার থাকবে।

হোয়াটসঅ্যাপের পুরনো চ্যাট ডিলিট করা

হোয়াটসঅ্যাপের স্টোরেজ পরিষ্কার করতে একটি সহজ এবং কার্যকর উপায় হলো পুরনো চ্যাটগুলি ডিলিট করা। যদি আপনি আপনার পুরনো চ্যাটগুলি আর প্রয়োজন না মনে করেন, তবে এগুলো ডিলিট করে স্টোরেজ খালি করতে পারেন। আপনি চাইলে নির্দিষ্ট চ্যাট অথবা একাধিক চ্যাট একসাথে ডিলিট করতে পারেন।

  1. চ্যাট খুলুন: প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপটি খুলুন।

  2. চ্যাট সিলেক্ট করুন: এরপর আপনি যে চ্যাট ডিলিট করতে চান, সেটি সিলেক্ট করুন।

  3. ডিলিট অপশন সিলেক্ট করুন: এবার মেন্যু থেকে ডিলিট অপশন সিলেক্ট করে চ্যাটটি ডিলিট করুন।

হোয়াটসঅ্যাপের মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট টুল ব্যবহার

হোয়াটসঅ্যাপে একটি মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট টুল রয়েছে, যা আপনাকে অপ্রয়োজনীয় মিডিয়া ফাইল খুঁজে বের করে ডিলিট করতে সাহায্য করবে। এই টুলটি ব্যবহার করে আপনি আপনার ফোনের স্টোরেজে জমে থাকা বড় মিডিয়া ফাইলগুলো সহজে ডিলিট করতে পারবেন।

  1. স্টোরেজ ব্যবহার পর্যালোচনা করুন: হোয়াটসঅ্যাপের "স্টোরেজ অ্যান্ড ডাটা" অপশন থেকে "ম্যানেজ স্টোরেজ" অপশনে যান।

  2. বড় ফাইলগুলো নির্বাচন করুন: এখানে আপনি ফাইলগুলো ফিল্টার করতে পারবেন। আপনি চাইলে বড় ছবি বা ভিডিও ফাইলগুলো সিলেক্ট করে ডিলিট করতে পারবেন।

ক্লাউড স্টোরেজে মিডিয়া সেভ করা

অন্য একটি উপায় হলো আপনার হোয়াটসঅ্যাপ মিডিয়া ক্লাউড স্টোরেজে সেভ করা, যেমন গুগল ড্রাইভ বা ড্রপবক্স। এতে আপনি আপনার গুরুত্বপূর্ণ মিডিয়া ফাইলগুলো ক্লাউডে রেখে ফোনের স্টোরেজ খালি রাখতে পারবেন।

  1. গুগল ড্রাইভে ফাইল আপলোড করুন: হোয়াটসঅ্যাপের গ্যালারিতে থাকা ছবি বা ভিডিও ফাইলগুলো গুগল ড্রাইভে আপলোড করুন।

  2. ড্রাইভ থেকে সেগুলো এক্সেস করুন: পরবর্তীতে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী এগুলো ডাউনলোড করতে পারবেন, এবং আপনার ফোনের স্টোরেজ খালি থাকবে।

ফলস্বরূপ

হোয়াটসঅ্যাপ স্টোরেজ খালি করা অনেক সহজ এবং কার্যকরী উপায়ে করা সম্ভব। যদি আপনি উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করেন, তাহলে আপনার ফোনের স্টোরেজ সবসময় পরিষ্কার থাকবে এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আরও সহজে বার্তা আদান-প্রদান করতে পারবেন। সাথে সাথে আপনার ফোনের পারফরম্যান্সও বাড়বে।


জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকায় নেতানিয়াহুর ছবিতে জুতাপেটা: ইসরাইলি গণমাধ্যমে প্রতিবাদের খবর

১২ এপ্রিল, শনিবার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে প্রায় এক লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করে। এই বিক্ষোভ সমাবেশে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়। সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ঢাকায় এসে ফিলিস্তিনের প্রতি তাদের সংহতি প্রকাশ করেন। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা শত শত ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে নিয়ে ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দেন, এবং গাজার বেসামরিকদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানাতে তারা এই প্রতিবাদে অংশ নেন।

বিক্ষোভকারীরা গাজার জনগণের প্রতি তাদের সমর্থন ও ইসরাইলের নৃশংস হামলার বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ জানান। ঢাকায় অনুষ্ঠিত এই বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশের মূল লক্ষ্য ছিল গাজায় ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানানো এবং ফিলিস্তিনের জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা।

নেতানিয়াহু ও তার মিত্রদের ছবিতে আঘাত: প্রতিবাদের শক্তিশালী বার্তা

এদিনের প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারীরা প্রধানত ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার মিত্রদের ছবি পদদলিত করেন। বিশেষত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবিতেও আঘাত করা হয়। এটি ছিল গাজার ওপর ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী প্রতিবাদ। বিক্ষোভকারীরা তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে জানান, তারা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে এবং ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধের পক্ষে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।

এছাড়াও, সমাবেশে ইসরাইলের রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়, যার মধ্যে নেতানিয়াহু, ট্রাম্প, এবং মোদির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ছিল স্পষ্ট। ছবিগুলোর ওপর আঘাত করে প্রতিবাদকারীরা এককাট্টা হয়ে বলছেন, তারা এই নেতাদের উত্থান এবং তাদের ফিলিস্তিনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে।

প্রতীকী কফিন: গাজার বেসামরিক নিহতদের স্মরণ

বিক্ষোভকারীরা গাজার নিহত বেসামরিকদের স্মরণে প্রতীকী কফিন এবং মৃতদেহের আকারে প্রতীকী লাশ নিয়ে আসেন। এভাবে তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গাজার নিরীহ মানুষের ওপর ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদ জানান। এই প্রতীকী প্রতিবাদ গাজার ওপর ইসরাইলি হামলার নির্মমতা ও বর্বরতা তুলে ধরে এবং গাজার জনগণের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের গভীর সহানুভূতির প্রতিফলন।

প্রতীকী কফিন এবং মৃতদেহের লাশ প্রদর্শন করে, বিক্ষোভকারীরা সারা বিশ্বের কাছে একটি অত্যন্ত শক্তিশালী বার্তা পাঠিয়েছেন: গাজার বেসামরিকরা মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত, এবং তাদের জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। বাংলাদেশ এই আন্দোলনে সামিল হয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে ফিলিস্তিনের অধিকারের পক্ষে এক দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছে।

বাংলাদেশের শক্তিশালী অবস্থান: ফিলিস্তিনের পক্ষে ঐক্য

বাংলাদেশ, একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ, ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখে না এবং আনুষ্ঠানিকভাবে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে অবস্থান নেয়। বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে এককাট্টা হয়ে কাজ করছে। এই প্রতিবাদ সমাবেশটি বাংলাদেশের জনগণের গাজার প্রতি দীর্ঘদিনের সমর্থনের এক আরেকটি শক্তিশালী উদাহরণ।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে বিভিন্ন সময়ে সমর্থন জানানো হয়েছে। বিশেষত, বাংলাদেশি জনগণ তাদের নৈতিক সমর্থন দিয়ে বিশ্বকে জানান দিয়েছে যে, তারা সবসময় ফিলিস্তিনের অধিকার এবং স্বাধীনতা পক্ষে দাঁড়িয়ে থাকবে।

বিশ্ব মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ: টাইমস অব ইসরাইলের প্রতিবেদন

এই বিক্ষোভ সমাবেশটি বিশ্বব্যাপী মিডিয়ার নজর কাড়ে। বিশেষ করে টাইমস অব ইসরাইল তাদের প্রতিবেদনে জানায়, ঢাকায় অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ সমাবেশের প্রতীকী প্রতিবাদ এবং অংশগ্রহণকারীদের শক্তিশালী বার্তা বিশ্বকে পৌঁছে দেয়। টাইমস অব ইসরাইল প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশের রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভটি ইসরাইলি হামলার বিরুদ্ধে এক বড় ধরনের প্রতিবাদ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাদের মতে, ঢাকায় এক লাখেরও বেশি মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন, যা গাজার ওপর ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের দৃঢ় অবস্থানকে বিশ্বব্যাপী জানান দেয়।

ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন: বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশের দৃঢ় অবস্থান

বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার এবং তারা আন্তর্জাতিক স্তরে ফিলিস্তিনের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। গাজার প্রতি এই সমর্থন শুধুমাত্র বাংলাদেশে নয়, বরং আন্তর্জাতিক মহলেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা এক কণ্ঠে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা এবং গাজার জনগণের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন।

এই প্রতিবাদ সমাবেশে বাংলাদেশের জনগণের অংশগ্রহণ এবং সমর্থন শুধু একটি জাতীয় বিষয় নয়, এটি আন্তর্জাতিকভাবে ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে।

রাহমাহ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ঈদ পুনর্মিলনী ২০২৫: আনন্দ, শিক্ষা ও ইসলামী বন্ধনের অপূর্ব সমন্বয়

১৩ এপ্রিল ২০২৫ (রবিবার) ঢাকার উত্তরা ব্রাঞ্চে রাহমাহ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে আজ অনুষ্ঠিত হলো এক আনন্দঘন ও শিক্ষা-সমৃদ্ধ ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। ইসলামী আদর্শে পরিচালিত এই স্কুলটি প্রতি বছর ঈদের পরপরই শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের নিয়ে এমন আয়োজন করে থাকে — যেখানে একসাথে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করা হয় এবং শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতার চর্চা হয় বাস্তব পরিসরে।

অনুষ্ঠানের সূচনা: কুরআন তিলাওয়াত ও ইসলামিক নাশিদে হৃদয় ছোঁয়া সূচনা-

সকাল ১০টায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের সূচনা হয় তেলাওয়াত ও ইসলামিক নাশিদ দিয়ে। পবিত্র কুরআনের আয়াত শুনে উপস্থিত সবাই এক আত্মিক প্রশান্তি অনুভব করেন। এরপর শিক্ষার্থীদের নাশিদ, কবিতা আবৃত্তি পরিবেশনা হয়।

শিশুদের অংশগ্রহণে প্রাণবন্ত পরিবেশ

বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাঁদের প্রস্তুতকৃত পরিবেশনায় অংশ নেয়। প্রতিটি পরিবেশনায় ছিল ইসলামী শিক্ষার আলো এবং নৈতিক বার্তা।

চিত্রগ্রহণ ও গার্ডিয়ানদের সম্পৃক্ততা

অনুষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য মুহূর্তগুলো ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে ধারণ করা হয়। উপস্থিত অভিভাবকগণ তাঁদের সন্তানদের পারফরম্যান্স সরাসরি উপভোগ করেন এবং এ আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এই ধরণের অনুষ্ঠান বিদ্যালয় ও পরিবারের মাঝে সুদৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলে।

আপ্যায়ন ও আন্তরিক মিলনমেলা

অনুষ্ঠানের শেষে ছিল হালকা নাস্তার আয়োজন, যেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক একত্রে মিলিত হন। এতে ঈদের সৌন্দর্য ও ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধ আরও বেশি করে ফুটে ওঠে।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য

বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল বলেন-

আমরা চাই শিশুদের শুধু পড়ালেখা নয়, বরং ইসলামি মূল্যবোধ ও সামাজিক দক্ষতার উন্নয়ন ঘটুক। ঈদ পুনর্মিলনীর মতো আয়োজনে শিশুরা যেমন আনন্দ করে, তেমনি জীবনের প্রকৃত শিক্ষাও পায়।

রাহমাহ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের এই ঈদ পুনর্মিলনী শুধু একটি অনুষ্ঠান নয় — এটি এক প্রাণবন্ত শিক্ষা, যেখানে ইসলাম, আনন্দ, ভ্রাতৃত্ব ও শৃঙ্খলার অপূর্ব সমন্বয় ঘটে। এই ধরণের আয়োজন একটি আদর্শ ইসলামিক স্কুলের পরিচয় বহন করে।

গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত আরও ২৯, পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর টানা হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ২৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও অনেকে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, এই হামলা বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ভোর থেকে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ভোর পর্যন্ত চালানো হয়েছে।

মানবিক বিপর্যয় বেড়েই চলেছে

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ইসরাইলের অবরোধের কারণে গাজায় ত্রাণ পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে সেখানে রোগ ও মৃত্যুর আশঙ্কা দিন দিন বাড়ছে। তার মতে, বর্তমানে গাজার অন্তত ১০ হাজারের বেশি মানুষকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।

ভয়াবহ পরিসংখ্যান

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলমান হামলায় এখন পর্যন্ত ৫০,৮৮৬ জন নিহত হয়েছেন এবং ১,১৫,৮৭৫ জন আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে, গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় জানায়, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৬১,৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা হাজার হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ, যাদের অনেকেই হয়তো আর জীবিত নেই।

সুড়ঙ্গ ও কৌশলগত উদ্বেগ

ইসরাইলের টিভি চ্যানেল ১২ জানায়, গাজার ভেতরে হামাসের কৌশলগত সুড়ঙ্গগুলোর মধ্যে মাত্র ২৫% ধ্বংস করতে পেরেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।

ইসরাইলি নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দাবি, গাজা ও মিসরের সীমান্তে অনেক চোরাচালান সুড়ঙ্গ এখনো সচল রয়েছে এবং এদের অধিকাংশই এখনো শনাক্ত করা যায়নি।

এই তথ্য উঠে এসেছে ফিলাডেলফি করিডোর সংক্রান্ত সাম্প্রতিক আলোচনায়। সেখানে এখনো ইসরাইল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি পিছু হটার বিষয়ে। যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভূগর্ভস্থ চোরাচালান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা সম্ভব নয়।

ফিলাডেলফি করিডোর ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

প্রায় দেড় মাস আগে, ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ এক বৈঠকে বলেন, ফিলাডেলফি করিডোরকে একটি ‘বাফার জোন’ হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে; যেমনটি লেবানন ও সিরিয়ায় করা হয়েছে।

চ্যানেল ১২ জানায়, তিনি আরও বলেন—

"আমি নিজে ফিলাডেলফি এলাকায় গিয়ে অনেক সুড়ঙ্গ পরিদর্শন করেছি। কিছু বন্ধ, কিছু এখনো খোলা রয়েছে। আমরা এমন তথ্য পেয়েছি যে, যুদ্ধবিরতির সময় হামাস আবারও হামলার পরিকল্পনা করছে, যার লক্ষ্য হতে পারে আমাদের সেনা সদস্য এবং আবাসিক এলাকা।" 

প্রতিবেদক: দিগন্ত বাংলা
ক্যাটাগরি: আন্তর্জাতিক

ভোজ্যতেল বাজারে উর্ধ্বগতি, সয়াবিন তেলে লিটারে ১৪ টাকা বাড়তি চাপ

সরকার এবং ভোজ্যতেল উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কয়েক দফা দর-কষাকষির পর অবশেষে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৮৯ টাকা নির্ধারণ করেছে ব্যবসায়ীরা। পূর্বে এই দাম ছিল ১৭৫ টাকা। ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন রোববার (১৩ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন দামের ঘোষণা দেয় এবং জানিয়েছে যে, ঘোষণার পর থেকেই এই নতুন দাম কার্যকর হয়েছে।

নতুন দাম কীভাবে নির্ধারিত হলো?

প্রকাশিত ঘোষণায় বলা হয়েছে, পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম আগের ৮৫২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯২২ টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম প্রতি লিটার ১৬৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগে ছিল ১৫৭ টাকা।

এর আগে ৯ ডিসেম্বর সর্বশেষ বার সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল, যখন প্রতি লিটারের দাম ছিল ১৭৫ টাকা। এরপর দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ীরা পুনরায় মূল্যবৃদ্ধির দাবি করে আসছিলেন।

দাম বৃদ্ধির পেছনের কারণ

জানা গেছে, চলতি বছরের ২৭ মার্চ ঈদের আগে মিল মালিকেরা নতুন করে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। তারা বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৮ টাকা ও খোলা তেলের দাম ১৩ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। কারণ হিসেবে তারা আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি এবং দেশে শুল্ক কর সুবিধার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা উল্লেখ করেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, ১ এপ্রিল থেকে কর সুবিধার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আমদানি ব্যয় বেড়েছে। ফলে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার প্রভাব পড়ে বাজারমূল্যে। এরপরেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে বসেন তারা।

দীর্ঘ আলোচনা ও দর-কষাকষি

ঈদের ছুটি শেষে সরকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে রবি, মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার দফায় দফায় বৈঠক হয়। এই বৈঠকগুলোতে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৯০ টাকার বেশি হবে কিনা, তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়। যদিও প্রথমদিকে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি, অবশেষে ১৮৯ টাকায় সম্মত হয় উভয় পক্ষ।

শুল্ক সুবিধা বাড়াতে সুপারিশ

ট্যারিফ কমিশন ইতিমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) কে একটি চিঠি দিয়ে ভোজ্যতেলের আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কর ছাড়ের মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। তবে এখনও এনবিআর চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।

সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া

এই দাম বৃদ্ধি মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য এক প্রকার ধাক্কা। তারা মনে করছেন, ঈদের পরপরই এমন দাম বাড়ানো জনসাধারণের কষ্ট আরও বাড়িয়ে তুলবে। সরকারের উচিত বাজার মনিটরিং আরও জোরদার করা এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ তেল সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রাখা।

আনন্দ শোভাযাত্রার নিরাপত্তায় ১৮ হাজার পুলিশ মোতায়েন, ড্রোনে চলবে সার্বক্ষণিক নজরদারি

বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ আসছে, এবং এই দিনটি উদযাপনে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত শক্তিশালী করা হয়েছে। প্রতিবছরের মতো এবারও রাজধানী ঢাকা এবং সারা দেশে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। এদিকে, বিশাল এই আয়োজনকে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সজাগ নজরদারি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়েছে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ১৮ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, পহেলা বৈশাখের উৎসব সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের জন্য ঢাকা মহানগরকে ২১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। এখানে নিরাপত্তার জন্য সাদা পোশাকসহ ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন থাকবে। ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে, যেমন রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রবীন্দ্র সরোবর, এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রা ও অন্যান্য অনুষ্ঠানস্থলগুলোতে প্রবেশের আগে তল্লাশি ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া, অনুষ্ঠানস্থলে সিসি ক্যামেরাসহ স্থির এবং ভিডিও ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটরিং করা হবে এবং ড্রোনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি চলবে।

প্রতিটি অনুষ্ঠানস্থলে নিরাপত্তা চেকপোস্ট

নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে, অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের মুখে আর্চওয়ে এবং মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি করা হবে। রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মতো প্রধান এলাকাগুলোতে ব্যারিকেট থাকবে এবং ফুট পেট্রোলিং টিমগুলো সারা দিন নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা ইভটিজিং ও ছিনতাই রোধে কাজ করবে।

গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার মনিটরিং

পুলিশ সদর দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, সারা দেশে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং সাইবার মনিটরিং চালু রাখা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো অপপ্রচার বা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা হলে তা দ্রুত রোধ করা হবে। এছাড়া, সাইবার পেট্রোলিংয়ের মাধ্যমে সাইবার ক্রাইম মোকাবিলা করা হবে এবং র‍্যাবও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে।

র‍্যাবের টহল ও বিশেষ বাহিনীর প্রস্তুতি

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) জানায়, তাদের বাহিনী সারা দেশে মোটরসাইকেল পেট্রোল, গাড়ি পেট্রোল, চেকপোস্ট, অবজারভেশন টাওয়ার এবং গোয়েন্দা নজরদারি চালাবে। র‍্যাবের সদস্যরা ২৪৭টি পিকআপ টহল, ১২২টি মোটরসাইকেল টহলসহ মোট ৩৪৬টি টহল, এবং সাদা পোশাকে ৪১৩ জন সহ মোট ২,৪৪৯ জন সদস্য মোতায়েন করবে। র‍্যাবের স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডো টিমও জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকবে।

নিরাপত্তায় পূর্ণ প্রস্তুতি, ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানিয়েছেন, নববর্ষের উৎসব সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ১৮ হাজার পুলিশ সদস্য পহেলা বৈশাখে ঢাকা শহরজুড়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করবে। র‍্যাব, আর্মি ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা নিরাপত্তা কাজে সহযোগিতা করবে এবং যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক বিভাগও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

পহেলা বৈশাখে দেশের শান্তিপূর্ণ উদযাপন আশা

এদিকে, ডিএমপি এবং র‍্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা আশা করেন এবারের পহেলা বৈশাখ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সতর্কতা, গোয়েন্দা নজরদারি, এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সকল নাগরিককে নিরাপদে উদযাপন করতে সহায়তা করা হবে।

পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষের উৎসব সবার জন্য আনন্দময় মুহূর্ত। তবে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৮ হাজার পুলিশ সদস্য, ড্রোন নজরদারি, এবং অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে যে, বাংলা বর্ষবরণ উৎসব সবাই নিরাপদভাবে উদযাপন করতে পারবেন।

এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার রোধে সাইবার পেট্রোলিংয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে, যা ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। নিরাপত্তার এই ব্যাপক ব্যবস্থা সবার জন্য একটি আনন্দময় ও শান্তিপূর্ণ পহেলা বৈশাখের আশ্বাস দিচ্ছে।

‘মার্চ ফর গাজা’: ইসরাইল ও বিশ্ব গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত

গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় লাখো মানুষের বিক্ষোভ, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি আলোচিত

১২ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি। এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন, যারা ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে সোচ্চার হন। বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করে এবং ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ করার দাবি জানিয়ে নানা স্লোগান দেন। সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য ছিল গাজার জনগণের প্রতি আন্তর্জাতিক সহানুভূতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর।

এই সমাবেশটি শুধু দেশের মধ্যে নয়, আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যেমন আল-জাজিরা, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি), ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট, আরব নিউজ, এবং টাইমস অব ইসরাইল। এমনকি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভের খবর প্রকাশ করেছে টরেন্টো স্টারস্টার ট্রিবিউনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ
আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী অংশ নেন এবং গাজায় ইসরাইলের সামরিক কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানান। প্রতিবাদকারীরা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরাইলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবার আহ্বান জানান।

আরব নিউজ তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রায় ১০ লাখের বেশি মানুষ ঢাকায় জমায়েত হন। তারা গাজার জনগণের প্রতি বাংলাদেশের বৃহত্তম সংহতির নিদর্শন হিসেবে বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভকারীরা ইসরাইলি পণ্য বয়কটের শপথ নেন এবং ‘ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিনি’ স্লোগান দেন।

টাইমস অব ইসরাইল উল্লেখ করেছে যে, প্রায় এক লাখ মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। তারা ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়ে এবং ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানান। এ সময়, ইসরাইলি সরকারের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেকেই ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি পদদলিত করেন।

বিক্ষোভে প্রতীকী লাশ প্রদর্শন
সমাবেশে গাজার বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর প্রতীক হিসেবে কয়েকজন বিক্ষোভকারী প্রতীকী লাশ নিয়ে আসেন। এটি ছিল গাজার বেসামরিক লোকদের প্রতি সহানুভূতির একটি শক্তিশালী প্রকাশ।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও বাংলাদেশের জনগণের সংহতি
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, সমাবেশে প্রায় এক লাখ মানুষ অংশ নেন, এবং এ কর্মসূচি দেশীয় ইসলামী দলগুলোসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন লাভ করে। একদিকে যেমন সমাবেশটি একটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ছিল, তেমনি অন্যদিকে এটি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত মানুষের জোরালো সংহতি প্রকাশের এক অনন্য উদাহরণ ছিল।

এছাড়া এপি এবং ফাস্টপোস্ট রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই প্রতিবাদ কর্মসূচি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং এটি বিশ্বে ইসরাইলের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠিয়েছে।

বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ ও সংহতি
ঢাকায় আয়োজিত এই বিক্ষোভ কর্মসূচি একদিকে গাজার জনগণের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের গভীর সহানুভূতি ও সমর্থন প্রকাশ করেছে, অন্যদিকে ইসরাইলি আগ্রাসন এবং তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানা দেশে এমন বিক্ষোভ আরও বাড়তে পারে, যা মানবাধিকার রক্ষা ও শান্তির জন্য একটি বৃহত্তর আন্দোলনে পরিণত হতে পারে।

ইতিহাসের সেরা নির্বাচন হবে বাংলাদেশে: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় রচনার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, "আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে দেশের ইতিহাসের সর্বোত্তম নির্বাচন। এটি গণতান্ত্রিক যাত্রার একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।"

শনিবার, ১৯ এপ্রিল, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন। এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (ANFREL) নামক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


কী বলেছে প্রধান উপদেষ্টা?

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, "এই নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক। আমরা এমন একটি নির্বাচন আয়োজন করতে চাই যা দেশের জনগণের আস্থা অর্জন করবে এবং গণতন্ত্রকে আরও দৃঢ় করবে।"


কারা ছিলেন এই সাক্ষাতে?

সাক্ষাতে অংশ নেন ANFREL-এর নির্বাহী পরিচালক ব্রিজা রোসালেস, পরামর্শক মে বুটয়, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার থারিন্ডু আবেরত্না, প্রোগ্রাম অফিসার আয়ান রহমান খান এবং প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট আফসানা আমেই।


কী বলেছে ANFREL?

এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (ANFREL) দীর্ঘ দুই দশক ধরে এশিয়াজুড়ে সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক সংস্কারের লক্ষ্যে কাজ করছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তারা যে বিষয়গুলো তুলে ধরে তা হলো:

  • নাগরিকচালিত নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা পুনর্গঠন

  • স্টেকহোল্ডার ম্যাপিং

  • সুশীল সমাজের সম্পৃক্ততা

  • নির্বাচনী স্বচ্ছতা বৃদ্ধির উদ্যোগ

তারা জানান, এসব পদক্ষেপ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়ক হবে।


আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণের গুরুত্ব

ANFREL-এর প্রতিনিধিরা উল্লেখ করেন যে, তারা বাংলাদেশে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে আন্তরিকভাবে কাজ করে যেতে আগ্রহী। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকল স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে প্রস্তুত তারা।


কেন এই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ?

বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ইতিহাসে প্রতিটি নির্বাচনই গুরুত্বপূর্ণ। তবে আগামী নির্বাচনকে ঘিরে যে প্রস্তুতি ও আন্তরিকতার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তা দেশের গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য আশার আলো হয়ে উঠেছে।

আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ইতিবাচক বার্তা এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের আগ্রহ — উভয়ই দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য শুভসংকেত। যদি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয়, তবে এটি শুধু একটি নির্বাচন নয়; বরং বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাবে। এই পরিস্থিতি তখন নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে বলে তিনি সতর্ক করেন।


যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক

বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে বিএনপি প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নিতে যমুনা ভবনে প্রবেশ করে এবং প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে বিকেল ২টার দিকে তারা বের হন।


দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি

বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমরা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, বিশেষ করে নির্বাচন নিয়ে আমাদের উদ্বেগ ও সুপারিশ তুলে ধরেছি। আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, চলমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের ব্যবস্থা নিতে হবে। এটি না হলে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে অস্থিরতা তৈরি হবে, তা নিয়ন্ত্রণে রাখা সরকারের জন্যও কষ্টকর হয়ে উঠবে।”


চার্টার গঠনের প্রস্তাব

বিএনপি মহাসচিব জানান, সরকার গঠিত সংস্কার কমিশন নিয়ে বিএনপির মতামত তুলে ধরা হয়েছে এবং তারা এসব প্রক্রিয়ায় গঠনমূলক ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, “আমরা বলেছি যে, যেসব বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য হবে, সেগুলো নিয়ে একটি ‘চার্টার’ করতে আমরা রাজি আছি।”


ডিসেম্বরই কাট-অফ টাইম

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছেন। কিন্তু আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছি—আমাদের সময়সীমা ডিসেম্বর। এর পরের সময় আমরা মেনে নিতে রাজি নই।”

তিনি আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ দেননি। তবে বলেছেন যে তিনি ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে চান। কিন্তু আমাদের স্পষ্ট অবস্থান হলো—ডিসেম্বরই আমাদের কাট-অফ টাইম।”


দলের সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, “আমরা দলের অভ্যন্তরীণ আলোচনা ও মিত্রদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক করবো এবং আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।”


প্রতিনিধি দলের সদস্যরা

প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।


রাজনীতিতে আলোচনা জোরালো হচ্ছে

এ বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি আবারও নির্বাচন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবিকে সামনে রেখে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা আরও গতি পাবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

স্বাধীনতার ‘আওয়ামী বয়ান’ বিলুপ্তিতে ঐক্যমতে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ইতিহাসে সংবিধানে সন্নিবেশিত ‘আওয়ামী বয়ান’ বিলুপ্তির বিষয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপি একমত পোষণ করেছে। এটি সংবিধান সংস্কার কমিশনের দেয়া প্রস্তাবনার আলোকে জানানো হয়েছে।

কমিশনের পর্যালোচনা অনুযায়ী, এই তিনটি রাজনৈতিক দল ‘সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫০(২) বিলুপ্ত করা এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট ৫ম, ৬ষ্ঠ এবং ৭ম তফসিল সংবিধানে না রাখার পক্ষে মতামত দিয়েছে। কমিশনের সর্বশেষ স্প্রেডশিট থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

১৫০ (২) অনুচ্ছেদ-এ উল্লেখ রয়েছে, ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ তারিখে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৬শে মার্চে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং ১০ই এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সংক্রান্ত দলিল এবং ভাষণের ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু এই তিনটি রাজনৈতিক দল এই অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করার প্রস্তাবে একমত হয়েছে।

সংবিধান সংস্কারে দলগুলোর মতামত

সংবিধান সংস্কার বিষয়ে বিএনপি, জামায়াত এবং এনসিপি মোট ৭০টি প্রস্তাবের মধ্যে ৪টি প্রস্তাবে একমত হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো বাংলাদেশি হিসেবে পরিচিতি-এর বিষয়টি এবং রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রক্রিয়া

এই প্রস্তাবনার মাধ্যমে, রাষ্ট্রদ্রোহ বা গুরুতর অসদাচরণের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসন করার সুপারিশ করা হয়েছে। এই বিষয়েও তিনটি দল একমত হয়েছে।

রাজনৈতিক ঐকমত্য এবং পরবর্তী পদক্ষেপ

কমিশন জানিয়েছে, আগামী সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত করা হবে।

জানা গেছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংবিধান সংস্কার এবং অন্যান্য বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়ে কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া হবে সেই প্রস্তাবগুলোকে, যেগুলোর বিষয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত।

বাংলাদেশ সর্বদা স্বাধীন ফিলিস্তিনের প্রতি তার অটল সমর্থন অব্যাহত রাখবে।

বাংলাদেশ, জাতিসঙ্ঘের একাধিক প্রস্তাবের সাথে সঙ্গতি রেখে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ন্যায্য লক্ষ্যে তার অটল সমর্থন অব্যাহত রাখবে। এ আশ্বাস শুক্রবার তুরস্কে ‘আনাতোলিয়া কূটনীতি ফোরাম (এডিএফ)-২০২৫’-এর ফাঁকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রসিকিউটর করিম এ.এ. খানের সাথে এক বৈঠকে দিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো: তৌহিদ হোসেন এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো: মাহফুজ আলম।

বৈঠকে ফিলিস্তিনের দুর্দশায় গভীর সহানুভূতি

বৈঠকে, বাংলাদেশ দুই উপদেষ্টা সাম্প্রতিক ফিলিস্তিনের জনগণের দুর্দশার প্রতি গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করেন এবং রোহিঙ্গা সঙ্কট ও গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আইসিসি’র অবস্থানের প্রশংসা করেন। তারা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ন্যায়বিচার ও সঙ্কটের চূড়ান্ত সমাধানের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার উপরও গুরুত্ব দেন।

আইসিসি ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সহযোগিতা

দুই পক্ষ বৈঠকে বাংলাদেশ ও আইসিসি’র মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা করেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন আইসিসি’র সাথে বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ ও আইনজ্ঞদের প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা জানান। আইসিসি’র প্রসিকিউটর করিম এ.এ. খান আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অটল অবস্থানের প্রশংসা করেন।

আনাতোলিয়া কূটনীতি ফোরামে অংশগ্রহণ

আজ তুরস্কের আনাতোলিয়ায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগানের পৃষ্ঠপোষকতায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘আনাতোলিয়া কূটনীতি ফোরাম (এডিএফ)-২০২৫’। এই ফোরামের মাধ্যমে কূটনীতির পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার এবং একটি বিভক্ত বিশ্বে সম্মিলিত পদক্ষেপের সাধারণ ভিত্তি খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা অনুসন্ধান করা হবে।

এফডিএফ-এ ২০টিরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, ৫০টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ৭০টিরও বেশি মন্ত্রী, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রায় ৬০ জন সিনিয়র প্রতিনিধি, শিক্ষার্থীসহ ৪ হাজারেরও বেশি অতিথি অংশগ্রহণ করছেন।

সূত্র: বাসস

সূদ: ইসলামী অর্থনীতি এবং এর বিপরীতে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

সূদ হল এমন একটি অর্থনৈতিক ধারণা, যেখানে ঋণ প্রদানকারী ব্যক্তি ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন। এটি এক ধরনের শোষণমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিত এবং ইসলামে এটি হারাম (নিষিদ্ধ) হিসেবে বিবেচিত। সূদ যে শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি করে তা নয়, এটি সামাজিকভাবেও মানুষের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করে। ইসলামে অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের জন্য সূদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং এটি ইসলামী অর্থনীতি তথা সমাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

সূদের হারাম হওয়ার কারণ

ইসলামে সূদ একটি অবিচার, শোষণ এবং অত্যাচারের প্রতীক। সূদের মাধ্যমে একজন ঋণদাতা ব্যক্তির হাতে অর্থের অতিরিক্ত পরিমাণ চলে আসে, যা পরবর্তীতে ঋণগ্রহীতার জীবনযাত্রার ওপর অশুভ প্রভাব ফেলে। অর্থনীতির এমন ব্যবস্থায় গরীব আরো গরীব হয়ে পড়ে এবং ধনী আরও ধনী হয়ে যায়। এটি একটি অবিচারপূর্ণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করে, যেখানে সাধারণ মানুষ শোষিত হয় এবং তাদের মৌলিক প্রয়োজন পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এতে কোনো ধরনের ন্যায়বিচার বা সামাজিক সমতা থাকে না।

কুরআনে সূদ সম্পর্কে নির্দেশনা

কুরআনে সূদের বিপক্ষে স্পষ্টভাবে বার্তা দেওয়া হয়েছে। সুরা আল-ব্যাকারাহর ২:২৭৫ আয়াতে বলা হয়েছে:

“যারা সূদ খায় তারা শুধু ওই ব্যক্তির মতো উঠবে, যে শয়তান দ্বারা পাগল হয়ে পড়েছে। এ কারণে যে তারা বলেছে, ‘যেহেতু ব্যবসা তো সূদের মতোই, তাই তা গ্রহণযোগ্য।’ অথচ আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সূদকে হারাম।”

এই আয়াতে সূদের খারাপ প্রভাব এবং এর সামাজিক ক্ষতির বিষয়ে সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। ইসলামে ব্যবসার মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের মধ্যে সমতা এবং ন্যায়বিচার স্থাপন করা, যেখানে সূদের কোনো স্থান নেই।

সূদের সামাজিক প্রভাব

সূদের মাধ্যমে ঋণগ্রহীতার ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়, যা তার জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তোলে। এটি সামাজিক দিক থেকেও ক্ষতিকর, কারণ সূদগ্রস্ত ব্যক্তির জন্য তার পরিবার, শিক্ষা, চিকিৎসা এবং অন্যান্য মৌলিক বিষয়গুলো নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। এর ফলে সমাজে আরও বেশি বৈষম্য তৈরি হয় এবং একদিকে গরীবরা আরও নিঃস্ব হয়ে পড়ে, অন্যদিকে ধনী আরো সমৃদ্ধি লাভ করে।

ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা: সূদের বিকল্প

ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সূদের সঙ্গে যুক্ত কোনো লেনদেন থেকে বিরত থাকে। ইসলামী অর্থনীতি অংশীদারি ভিত্তিক ব্যবস্থাকে সমর্থন করে, যেখানে দুটি পক্ষ লাভ এবং ক্ষতির ভিত্তিতে লেনদেন করে। এর মাধ্যমে শোষণ এবং একক মালিকানার প্রতিযোগিতা কমে আসে। ইসলামী ব্যাংকিং সিস্টেমেও মুদারাবা, মুশারাকা এবং ইjarah মত ব্যবস্থা রয়েছে, যা ব্যবসায়ীদের মধ্যে সহযোগিতা এবং পারস্পরিক লাভের পরিবেশ সৃষ্টি করে।

ইসলামী ব্যাংকিং এবং সূদের প্রতিস্থাপন

ইসলামী ব্যাংকিং সিস্টেম সুদমুক্ত ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এখানে কোনো ধরনের হারাম লেনদেন নেই, বরং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লাভ-ক্ষতির ভাগাভাগি করা হয়। মুদারাবা এবং মুশারাকা মতো ব্যবস্থা ঋণগ্রহীতাকে এক ধরনের সহযোগিতা দেয়, যেখানে উভয় পক্ষ লাভবান হতে পারে এবং শোষণের কোনো সুযোগ থাকে না। এটি মানবাধিকার এবং সামাজিক ন্যায়ের সমর্থন করে।

ইসলামে সূদের বিরুদ্ধে স্পষ্টভাবে অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছে। এটি শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, বরং সামাজিক ও নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও বিপজ্জনক। ইসলামী অর্থনীতি প্রতিটি মুসলমানের জন্য একটি ন্যায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রস্তাব করে, যেখানে সূদের স্থান নেই এবং সেখানে সম্মানজনক, পারস্পরিক লাভজনক ব্যবসার মাধ্যমে সমাজে সমতা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।

হোয়াটসঅ্যাপ স্টোরেজ খালি করার সহজ উপায়

বর্তমান সময়ে হোয়াটসঅ্যাপ এক অন্যতম জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশন, যা প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে ব্যক্তি, পরিবার, বন্ধুবান্ধব কিংবা কর্মক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বার্তা আদান-প্রদান করা হয়। তবে, যখন ফোনে অনেক মিডিয়া ফাইল (ছবি, ভিডিও, ডকুমেন্ট ইত্যাদি) জমা হতে থাকে, তখন তা ফোনের স্টোরেজে অতিরিক্ত চাপ তৈরি করে। এর ফলে ফোনে স্টোরেজের সমস্যা হতে পারে, এবং কিছু ক্ষেত্রে মেসেজ সেন্ড বা রিসিভ করার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই হোয়াটসঅ্যাপের স্টোরেজ খালি করার জন্য কিছু সহজ উপায় জানা প্রয়োজন।

হোয়াটসঅ্যাপের অটো-ডাউনলোড অপশন বন্ধ করা

হোয়াটসঅ্যাপে ফাইল ডাউনলোডের জন্য সাধারণত অটো-ডাউনলোড অপশন চালু থাকে। যার ফলে, সব মিডিয়া ফাইল (ছবি, ভিডিও, ডকুমেন্ট) আপনার ফোনে অটো সেভ হয়ে যায়। এর ফলে আপনার ফোনের গ্যালারি অপ্রয়োজনীয় মিডিয়া ফাইলে পূর্ণ হয়ে যেতে পারে, যা আপনার স্টোরেজের বড় একটি অংশ দখল করে নেয়। হোয়াটসঅ্যাপে এই অটো-ডাউনলোড অপশন বন্ধ করলে আপনি নিজের গ্যালারি স্টোরেজকে বেশ খানিকটা খালি রাখতে পারবেন। নিচে ধাপে ধাপে দেখানো হলো কিভাবে এই অপশন বন্ধ করা যায়:

  1. হোয়াটসঅ্যাপ খুলুন: প্রথমে আপনার ডিভাইসে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপটি খুলুন।

  2. থ্রি-ডট মেন্যু থেকে সেটিংসে যান: উপরের ডান দিকের কোণে থ্রি-ডট মেন্যু আইকনে ক্লিক করুন এবং সেটিংস অপশনে যান।

  3. ডাটা অ্যান্ড স্টোরেজ ইউসেজে ক্লিক করুন: এরপর ডাটা অ্যান্ড স্টোরেজ ইউসেজ অপশনে ক্লিক করুন। এখানে আপনি অটো ডাউনলোডের অপশন পাবেন।

  4. মিডিয়া ডাউনলোড অপশন বন্ধ করুন: আপনি "অটো ডাউনলোড মিডিয়া" অপশন থেকে "ভিডিও", "অডিও", এবং "ডকুমেন্ট" এর জন্য অটো ডাউনলোড বন্ধ করতে পারবেন। এখানে আপনি ওয়াই-ফাই অথবা মোবাইল ডাটা স্যুইচের উপর নির্ভর করে অটো ডাউনলোড অপশনটি বন্ধ বা চালু করতে পারেন।

এই পরিবর্তন করার পর, আপনার ফোনে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে যে কোনো নতুন মিডিয়া ফাইল ডাউনলোড হবে না, যদি না আপনি নিজে সেগুলি ডাউনলোড করেন। ফলে অপ্রয়োজনীয় মিডিয়া গ্যালারিতে সেভ হবে না এবং আপনার ফোনের স্টোরেজে আর কোনো সমস্যা হবে না।

মিডিয়া ভিজিবিলিটি বন্ধ করা

যদিও আপনি অটো-ডাউনলোড বন্ধ করেছেন, তবুও পুরনো মিডিয়া ফাইলগুলো আপনার গ্যালারিতে থাকতে পারে। তবে, আপনি হোয়াটসঅ্যাপে মিডিয়া ভিজিবিলিটি অপশনটি বন্ধ করে রাখতে পারেন, যাতে নতুন মিডিয়া ফাইল গ্যালারিতে প্রদর্শিত না হয়। এই অপশনটি বন্ধ করলে, শুধুমাত্র সেই মিডিয়া ফাইলগুলো আপনার গ্যালারিতে থাকবে যা আপনি নিজে হাতে ডাউনলোড করবেন। এটি করতে হলে:

  1. সেটিংসে যান: হোয়াটসঅ্যাপ খুলে, সেটিংস অপশনে ক্লিক করুন।

  2. চ্যাট অপশনে যান: এরপর চ্যাট অপশনে ক্লিক করুন এবং সেখানে মিডিয়া ভিজিবিলিটি অপশনটি বন্ধ করে দিন। এর ফলে, নতুন মিডিয়া ফাইল গ্যালারিতে প্রদর্শিত হবে না।

এটি বিশেষভাবে কার্যকর হবে যদি আপনি কিছু নির্দিষ্ট চ্যাট থেকে এক্সট্রা মিডিয়া ফাইল সেভ করতে চান না। এতে আপনার ফোনের গ্যালারি আরও সুশৃঙ্খল এবং পরিষ্কার থাকবে।

হোয়াটসঅ্যাপের পুরনো চ্যাট ডিলিট করা

হোয়াটসঅ্যাপের স্টোরেজ পরিষ্কার করতে একটি সহজ এবং কার্যকর উপায় হলো পুরনো চ্যাটগুলি ডিলিট করা। যদি আপনি আপনার পুরনো চ্যাটগুলি আর প্রয়োজন না মনে করেন, তবে এগুলো ডিলিট করে স্টোরেজ খালি করতে পারেন। আপনি চাইলে নির্দিষ্ট চ্যাট অথবা একাধিক চ্যাট একসাথে ডিলিট করতে পারেন।

  1. চ্যাট খুলুন: প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপটি খুলুন।

  2. চ্যাট সিলেক্ট করুন: এরপর আপনি যে চ্যাট ডিলিট করতে চান, সেটি সিলেক্ট করুন।

  3. ডিলিট অপশন সিলেক্ট করুন: এবার মেন্যু থেকে ডিলিট অপশন সিলেক্ট করে চ্যাটটি ডিলিট করুন।

হোয়াটসঅ্যাপের মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট টুল ব্যবহার

হোয়াটসঅ্যাপে একটি মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট টুল রয়েছে, যা আপনাকে অপ্রয়োজনীয় মিডিয়া ফাইল খুঁজে বের করে ডিলিট করতে সাহায্য করবে। এই টুলটি ব্যবহার করে আপনি আপনার ফোনের স্টোরেজে জমে থাকা বড় মিডিয়া ফাইলগুলো সহজে ডিলিট করতে পারবেন।

  1. স্টোরেজ ব্যবহার পর্যালোচনা করুন: হোয়াটসঅ্যাপের "স্টোরেজ অ্যান্ড ডাটা" অপশন থেকে "ম্যানেজ স্টোরেজ" অপশনে যান।

  2. বড় ফাইলগুলো নির্বাচন করুন: এখানে আপনি ফাইলগুলো ফিল্টার করতে পারবেন। আপনি চাইলে বড় ছবি বা ভিডিও ফাইলগুলো সিলেক্ট করে ডিলিট করতে পারবেন।

ক্লাউড স্টোরেজে মিডিয়া সেভ করা

অন্য একটি উপায় হলো আপনার হোয়াটসঅ্যাপ মিডিয়া ক্লাউড স্টোরেজে সেভ করা, যেমন গুগল ড্রাইভ বা ড্রপবক্স। এতে আপনি আপনার গুরুত্বপূর্ণ মিডিয়া ফাইলগুলো ক্লাউডে রেখে ফোনের স্টোরেজ খালি রাখতে পারবেন।

  1. গুগল ড্রাইভে ফাইল আপলোড করুন: হোয়াটসঅ্যাপের গ্যালারিতে থাকা ছবি বা ভিডিও ফাইলগুলো গুগল ড্রাইভে আপলোড করুন।

  2. ড্রাইভ থেকে সেগুলো এক্সেস করুন: পরবর্তীতে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী এগুলো ডাউনলোড করতে পারবেন, এবং আপনার ফোনের স্টোরেজ খালি থাকবে।

ফলস্বরূপ

হোয়াটসঅ্যাপ স্টোরেজ খালি করা অনেক সহজ এবং কার্যকরী উপায়ে করা সম্ভব। যদি আপনি উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করেন, তাহলে আপনার ফোনের স্টোরেজ সবসময় পরিষ্কার থাকবে এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আরও সহজে বার্তা আদান-প্রদান করতে পারবেন। সাথে সাথে আপনার ফোনের পারফরম্যান্সও বাড়বে।